শনিবার, মার্চ ২৫, ২০২৩

Close

Home সারাদেশ গ্রীষ্মের শুরুতে কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে প্রকৃতি; মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমিরা

গ্রীষ্মের শুরুতে কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে প্রকৃতি; মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমিরা

বৈশাখের শুরুতে বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলে কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া তার লাল আবীর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আপন সৌন্দর্যের মহিমা নিয়ে। কৃষ্ণচূড়ায় লাল আবীর গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা। “কৃষ্ণচূড়া আগুন তুমি আগুন ঝরা বানে, খুন করেছে শূন্য তোমার গুন করেছ গানে” কৃষ্ণচূড়া দেখে কবি তাঁর ভাষায় এমনটাই বলেছিলেন।

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম, চা বাগান, লাউয়াছড়া বন ও শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, পরিবেশের সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষ কৃষ্ণচূড়া গাছ বর্তমানে রাস্তার ধারের আঙিনাসহ বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের পাপড়ি লাল হলুদ রঙের হয় এর ভিতর অংশে হালকা হলুদ রং যুক্ত। অনেক দূর থেকে দেখলে মনে হয় গাছে গাছে যেন আগুন জ্বলছে। ফুল ফুটন্ত কৃষ্ণচূড়া গাছের মনোরম দৃশ্য দেখে যে কেউ থমকে দাঁড়াবে ও মনে আনন্দের ঢেউ জাগাবে এটা নিশ্চিত।

কৃষ্ণচূড়ার আদিনিবাস মাদাগাস্কার। পরিবার Leguminosae, বৈজ্ঞানিক নাম Delonix regia। তবে, এ ফুল বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিবেশ ও ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে মিশে আছে যুগ যুগ ধরে।

জানা যায়, এই কৃষ্ণচূড়া ফুল লাল ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আমরা না জেনে একে কৃষ্ণচূড়া ফুল বলে থাকি। লাল রঙের ফুলকে কৃষ্ণচূড়া ও হলুদ রঙ্গের ফুলকে রাধাচূড়া বলা হয়। তবে হলুদ রঙের রাধাচূড়া এখন তেমন দেখা যায় না বললেই চলে। আমাদের দেশে এপ্রিল মাসে এই ফুল ফোটে। বছরের অন্যান্য সময় এই ফুল সচারচার চোখে না পড়লেও এপ্রিল মে মাসে যখনি গাছে নতুন পাতা বা ফুল ফোটা শুরু করে তখনি যেন পথচারির নজর কাড়ে মনোমুগ্ধকর এই কৃষ্ণচূড়া। পথের মধ্যে লাল ও হলুদ কৃষ্ণচূড়া দেখলেই মনে হয় একটু থেমে নেই।

কবি জহিরুল মিঠু জানান, বসন্তে এলেও এই ফুল দীর্ঘ সময় থাকে ও দীর্ঘ গাছে ফুটে বলে এই ফুল মানুষকে কাছে টানে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে লাল ফুল আমাদের লাল-সবুজ পতাকার কথাও মনে করিয়ে দেয়। দূর থেকেও এর সৌন্দর্য খুব উপভোগ্য! কৃষ্ণচূড়া আমাদের অনেক কবিতায় এসেছে। এখন মনে পড়ছে, কবি মহাদেব সাহার “চৈত্রে হয়তো ফোটেনি কৃষ্ণচুড়া তাতে ক্ষতি নেই; তোমার ঠোঁটেই দেখি এসেছে আবার কৃষ্ণচুড়ার ঋতু…।”

ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমি সানজিতা শারমিন বলেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল শুধু ফুল নয় এটা সৌন্দর্যবর্ধনেও অন্যতম। যে বাড়ি বা এলাকায় একটা কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছে থাকে সেই এলাকা লালচে সৌন্দর্যে ভরপুর থাকে। একদম চোখ জুড়ানো দৃশ্য। কৃষ্ণচূড়া ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। কৃষ্ণচূড়া আমার শৈশবের ও একটা অংশ। তুমুল ঝড়ে কৃষ্ণচূড়া নিজের বুক দিয়ে আমাদের ঘরকে বাঁচিয়ে নিজের শেকড় উপড়ে ফেলেছিলো।

শিল্পী নিপা আচার্য বলেন, বাংলার সৌন্দর্য্য মানেই কৃষ্ণচূড়া। এই ফুলের কোমলতা মনকে মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ করে রাখে।ভালবাসায় সিক্ত করে। কৃষ্ণচূড়া নামটাই অন্যরকম এক প্রশান্তি দেয় মনে।কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য্যে সমৃদ্ধ থাকুক বাংলার প্রকৃতি। ভালবাসার রং হোক কৃষ্ণচূড়ার মত।

রুনা পাল বলেন, উজ্জ্বল লাল রংয়ের এই ফুলটি আমার খুব প্রিয়। ফুলটির নাম ”কৃষ্ণচূড়া”। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে- আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’, কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গানে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করা যায়। আগুনরাঙ্গা এই ফুলটি প্রকৃতির এক অপরুপ সৌন্দর্যে পরিণত হয়।

ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি প্রকৃতিতে নেমে আসতে শুরু করে। দূর থেকে কৃষ্ণচূড়া দেখলে শুধু মানুষের নয়, পাখিদেরও যেন মন ভরে ওঠে। শরীরে রক্তিম আভা মেখে কৃষ্ণচূড়া যেন সারাক্ষণ সবুজ বনভূমি, তৃণভূমিকে আলোকিত করে রেখেছে।

পিপি/এসএম

1 টি মন্তব্য

আপনার মন্তব্য দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

- Advertisment -
  • সর্বশেষ
  • আলোচিত

সাম্প্রতিক মন্তব্য

স্বঘোষিত মহাপুরুষ on লকডাউন বাড়লো আরও একসপ্তাহ
জান্নাতুল ফেরদৌস on চিরবিদায় কিংবদন্তি কবরীর