ঢাবি প্রতিনিধি : আবরার হত্যা মামলার রায় দ্রুত কার্যকর এবং গেস্টরুমে ছাত্রদেরকে নিপীড়ন-নির্যাতন বিরোধী আইন পাশের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র আধিকার পরিষদ।
আজ বুধবার(৮ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল মিয়া, এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়ে শহিদ হওয়া আবরার ফাহাদ যেমন আমাদের ভাই, ঠিক তেমনি আজ যাদেরকে মৃত্যুদণ্ডের ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ শোনানো হয়েছে তারাও আমাদের ভাই। তবে আমরা জানতে চাই যে তাদেরকে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শেখালো কারা? কারা তাদেরকে এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত করতে বাধ্য করলো?”
তিনি আরো বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে। আমি তাদেরকে বলতে চাই, ছাত্র রাজনীতি কোনো সমস্যা নয় বরং অপ-ছাত্র রাজনীতিই হল আসল সমস্যা। আমাদেরকে এই অপ ছাত্র-রাজনীতির বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে।
এসময় তিনি গত ২৯-ই নভেম্বর কুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সেলিমের নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, ছাত্র লীগের নির্মমতার শিকার শুধু সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরাই না। বরং শিক্ষকরাও এখন তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
এখন থেকে এ ধরনের ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছাত্রদের পাশাপাশি হলপ্রশাসন ও দায়িত্বরত শিক্ষকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম।
তিনি আরো বলেন, আবরার হত্যার সাথে জড়িত ছাত্রদের বিচার করা হয়েছে। কিন্ত এই হত্যার দায় কি হল প্রশাসন এড়াতে পারবে? আমরা চাই হল প্রশাসন ও দায়িত্বরত শিক্ষকেরা তাদের দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করুক। দেশের সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্ররা নির্যাতন নীপিড়ন করে। কিন্ত হল প্রশাসন এর কতটুকু দায় বহন করে?
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, “আবরার হত্যা মামলা রায়ের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের নাটকীয়তা দেখতে চাই না। ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি যে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদেরকে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। আমরা আবরার হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়নে এ ধরনের কোনো কিছু শুনতে চাই না। আমরা চাই আবরারের হত্যাকারীরা তাদের যথাযথ শাস্তি পাক।”
বাংলাদেশে এই প্রথম গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে আদালতের আজকের এই রায়কে তিনি সাধারণ ছাত্র সমাজের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, “বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বলেছে ‘আবরার রক্ত দিয়ে সুন্দর বুয়েট উপহার দিয়েছে’, কিন্ত আমরা চাই আবরারের এই রক্তের বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সারা দেশের সকল শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ হোক।”
ডেল্টামেইল/৮ডিসেম্বর/এএইচ