শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

Close

Homeশিল্প-সাহিত্যলোক শিল্পশিশুদের শিক্ষণীয় বার্তা দিতে পারে পুতুল নাচ

শিশুদের শিক্ষণীয় বার্তা দিতে পারে পুতুল নাচ

গ্রাম বাংলায় বছরের বিশেষ সময়ে উৎসব আয়োজনে দেখা মিলত পুতুল নাচের। পৌরাণিক কাহিনী, সামাজিক সচেতনতার মতো বিষয়গুলোতে বিনোদনের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা দিত পুতুল নাচ। ঐতিহ্যবাহী এ ধারাটি এখন বিলুপ্ত প্রায়। তবে তরুণদের অনেকেই আদি মাধ্যম হিসেবে এখনো ধরে রেখেছে লোকসংস্কৃতির এ উপাদানটি।

সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনই ছিল পুতুল নাচের আদি ধারা। যেখানে মঞ্চের পেছন থেকে তার বা সুতা কিংবা হাতে পুতুলগুলোর নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করা হতো, সঙ্গে থাকত কণ্ঠ।

প্রাচীন গ্রিসে খৃস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে পাপেট শো বা পুতুল নাচের প্রচলন হয়। দার্শনিক এরিস্টটলের লেখায়ও পুতুলনাচের উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুলের প্রচলন ছিল প্রাচীনকাল থেকেই। এখন তার অনেকটাই বিলুপ্ত। তবে সংস্কৃতির আদি এই ধারা টিকিয়ে রাখতে বিছিন্নভাবে কাজ করছেন অনেক তরুণ।

জলপুতুল পাপেটস-এর আর্ট ডিরেক্টর আজমাইন আজাদ কথা বলেন, ‘যেটা আগে ছিল পুতুলনাচ শুধু মেলার জন্য, আমরা এখন মাঠে-ঘাটে যে কোনো জায়গায় পাপেট নিয়ে বসে যেতে পারি। যখন বস্তির স্কুলগুলোতে কাজ করতে যাই তখন ওদেরকে আমরা ওভাবেই বার্তাটা দিতে পারি। মাদকাসক্তিসহ নানা অপকাজ থেকে দূরে থাকার জ্ঞান তাদের দেয়া যায়। আর ওরা অনেক মজা পায়। ওদের এটা খুব ভালো করে ক্যাচ করে।’

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে কয়েকজন তরুণ মিলে ২০০৫ সাল থেকে শুরু করেন পুতুল নাচের সংগঠন জলপুতুল পাপেটস্। বিভিন্ন শো করার পাশাপাশি বস্তির পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্যও কাজ করছেন তারা।

জলপুতুল পাপেটস-এর কস্টিউম ডিজাইনার সৈয়দা ফিরোজা খানম রুমী বলেন, ‘মনে করেন কোনো একটা বাচ্চা পড়াশোনা ঠিকমত করছে না, ও যখন পাপেটটা করে, পাপেট নিয়ে কথা বলে তখন কিন্তু ওর একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়ে যায়। ও সুন্দর করে ওর পড়াটা কমপ্লিট করে ফেলে।’

সংগঠনটির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সাইফুল ইসলাম জার্নাল জানান, ‘নিজস্ব অর্থায়নে আমরা শুরু করেছিলাম। দেখা গেছে, কেউ কোনো কিছু খেয়ে ফেলে দিয়েছে, ফাউন্ড ম্যাটেরিয়াল অথবা একটা ডিসপোজেবল প্লেট এটাকে আমরা পাপেট বানালাম। একটা বক্স ওটাকে কেটে আমরা সেটটা বানালাম। শুরুতে আমাদের ইনভেস্টমেন্ট হলো সবার মেধা। শিশুদের সঙ্গে আনন্দ পাই কারণ ওদেরকে অন্তত এটা বলা যাবে, এটা করো এটা করো না; এটা করলে এই হবে, এই হবে না। এক ধরনের শিক্ষা দিতে পারবো।’

জলপুতুল পাপেটস-এর কো-অর্ডিনেটর আসিফ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাছে ফোন আসে আপনারা পাপেট মেকিং করেন কি না। আমরা বাচ্চাদের পাপেট শো দেখাতে চাই। আপনারা আমাদের পাপেট বানিয়ে দিন, এরকম। এখন আগ্রহ বাড়ছে, আমরা চাচ্ছি এটা বাড়ুক। বস্তিতে আছে বলে যে খারাপ অবস্থানে আছে তা না, আমরা সেইসব শিশুদের বোঝানোর চেষ্টা করি, তুমি কারো থেকে কম নও, তুমি চাইলে যে কোন কিছু পারবে।’

আঙুল, মোজা, পেন্সিল, পুতুলসহ পুরোনো নানা জিনিস দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করা যায় এসব পাপেট। তাদের মতে বর্তমান সময়ে শিশুদের মোবাইল আসক্তি দূর করতে খুব সহজেই পুতুল নাচের মাধ্যমে সামাজিক নানা শিক্ষা ও বিনোদন দেয়া সম্ভব।

আপনার মন্তব্য দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

- Advertisment -
  • সর্বশেষ
  • আলোচিত

সাম্প্রতিক মন্তব্য

স্বঘোষিত মহাপুরুষ on লকডাউন বাড়লো আরও একসপ্তাহ
জান্নাতুল ফেরদৌস on চিরবিদায় কিংবদন্তি কবরীর